একসময়ের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ইন্টেল (Intel) এখন প্রতিযোগীদের কাছ থেকে তীব্র চ্যালেঞ্জ এবং অভ্যন্তরীণ অদক্ষতার মুখোমুখি হয়ে এক কঠিন সময় পার করছে। এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে নতুন সিইও লিপ-বু তান (Lip-Bu Tan) একটি সাহসী কৌশল অবলম্বন করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই এবং বিপণন কার্যাবলীকে অ্যাকসেঞ্চারের (Accenture) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সক্ষমতার কাছে আউটসোর্স করা অন্তর্ভুক্ত।
ছাঁটাইয়ের ঢেউ:
তানের কৌশল অনুযায়ী, ইন্টেল তার কর্মী সংখ্যা ২১% থেকে ২৫% কমিয়ে আনবে, যা বিশ্বজুড়ে ১০,০০০-এরও বেশি কর্মীকে প্রভাবিত করবে। এক বছরের মধ্যে এটি ইন্টেলের তৃতীয়বারের মতো বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাই। এই পদক্ষেপ কর্মচারী মনোবল, প্রতিভা ধরে রাখা এবং সামগ্রিক কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
বিপণনে এআই-এর ব্যবহার:
একসময় “ইন্টেল ইনসাইড” ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ইন্টেলের বিপণন ছিল কিংবদন্তীতুল্য, কিন্তু ২০০০ সাল থেকে ধারাবাহিক নেতৃত্ব এবং কার্যকর বার্তার অভাবে এর পতন ঘটে। বিপণন কার্যক্রম অ্যাকসেঞ্চারের এআই-এর কাছে আউটসোর্স করার সিদ্ধান্তটি ব্যয় কমানোর একটি পদক্ষেপ, যার লক্ষ্য হলো সক্ষমতা আধুনিকীকরণ এবং দক্ষতা, ডেটা বিশ্লেষণ ও অপ্টিমাইজড ক্যাম্পেইনের জন্য এআই-এর সুবিধা গ্রহণ করা।
ঝুঁকি ও সম্ভাবনা:
তবে, এই পদক্ষেপের কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। এর মধ্যে সৃজনশীলতার সম্ভাব্য ক্ষতি, এআই “হ্যালুসিনেশন” থেকে ভুল তথ্য ছড়ানোর সম্ভাবনা এবং গ্রাহক যোগাযোগের ক্ষেত্রে মানবিক সংযোগ হ্রাস পাওয়া অন্যতম। ইন্টেলের এই সাহসী পদক্ষেপের সাফল্য নির্ভর করবে আর্থিক পুনর্গঠন এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সাথে সৃজনশীলতা, মানবিক সংযোগ এবং প্রকৃত ব্র্যান্ড গল্প বলার ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষমতার ওপর। এই পদক্ষেপ ইন্টেলকে আবার তাদের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।